স্টিকার কারসাজি, কাপড়ের দাম পরিবর্তন করলে ব্যবস্থা: ভোক্তার ডিজি

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ফিক্সড প্রাইসের দোকানে কাপড়ে নতুন করে স্টিকার লাগিয়ে দাম পরিবর্তন করা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক, কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘ফিক্সড প্রাইসের দোকানে স্টিকার চেঞ্জের মাধ্যমে কাপড়ের দাম চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। গত বছরও আমরা এ বিষয়টি দেখেছি। ঈদ সামনে রেখে কমপক্ষে তিন মাস আগে থেকেই আপনাদের যাদের ব্র্যান্ডের দোকান আছে তাদের উৎপাদন কেন্দ্রিক পরিকল্পনা, প্রস্তুতি থাকে। সে অনুযায়ী প্রোডাকশন হয়। তার মানে উৎপাদন খরচ, লাভ সব আগে থেকেই ঠিক হয়ে থাকে। কিন্তু দিনের ব্যবধানে, সময়ের ব্যবধানে বা চাহিদার ব্যবধানে এসব দাম পরিবর্তন হয়ে যায় নতুন দামের স্টিকার লাগিয়ে। এসব করবেন না প্লিজ। যখন দেখছেন ক্রেতারা কিনছে, খুবই চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে একটা ড্রেসের ঠিক তখন আপনারা রাতারাতি সেই ড্রেসটার দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন, এটা কোনো ভাবেই আমরা মেনে নেব না, আমাদের মনিটরিং টিম এটা নিয়ে কাজ করবে। আমরা ইতোমধ্যে অনেক ড্রেসের মূল্য তালিকার ছবি তুলে রেখেছি, সেগুলো নিয়েই আমরা মাঠে নামব। যদি দেখি এ কয়দিনের ব্যবধানে চাহিদার ওপর ডিপেন্ড করে এসব ড্রেসের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় বলতে গেলে বছরের ৬০ শতাংশ বেচাকেনা হয়। তাই আপনাদের তো অবশ্যই ঈদ নিয়ে একটি টার্গেট থাকে। একটা ড্রেস সকাল বেলা দেখা গেল যে ১২০০ টাকা, চাহিদার কারণে রাত্রি বেলা দেখা যাচ্ছে ওই ড্রেসটার ওপরেই নতুন করে স্টিকার বসানো হয়েছে, দাম করা হয়েছে ১৬০০ টাকা। এতই বিক্রি হচ্ছে, নতুন করে স্টিকার তৈরির সুযোগ পাননি, আগের স্টিকারের ওপরেই স্টিকার বসিয়ে দিয়েছেন। পরের দিন দেখা যাচ্ছে সেই ড্রেসটার দাম হয়ে গেছে আরও বেশি। শুধু স্টিকার চেঞ্জ করে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনায় ভোক্তা-অধিকার সরাসরি বিঘ্নিত হচ্ছে যে কারণে আমরা এটি হতে দেব না।’

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘রমজান সামনে রেখে ব্রয়লার মুরগির বাজার অ্যাবনরমাল আচরণ শুরু করেছিল। আমরা সেখানে নজর দিয়েছি, আমাদের পদক্ষেপের ফলে এবং একসঙ্গে সবাই কাজ করার ফলে এটি এখন স্বাভাবিক অবস্থায় এসেছে। ঈদ সামনে রেখে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে আরও কাজ করব। কেনাকাটা থেকে শুরু করে যেসব জায়গায় ভোক্তাদের সরাসরি স্বার্থ জড়িত সেই বিষয়গুলো আমরা আমলে নিয়ে মাঠে নামব। পাশাপাশি ঈদ সামনে রেখে গণপরিবহনের টিকিটের সংকট, অতিরিক্ত দাম আদায় করা হয় ভোক্তাদের কাছ থেকে। এবার যেন এগুলো না হয়, যাত্রীরা যেন সঠিক ভাবে, ভালো ভাবে এগুলো সংগ্রহ করতে পারে সে জন্য আমরা এ জায়গাতেও অভিযান পরিচালনা করব।’

মতবিনিময় সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক, কাপড় ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।